Raw Hasan – Journeys Against the Odds

From border detentions to UNESCO wonders — the solo, independent travels of a Bangladeshi, with one of the world’s weakest passports.

বাংলাদেশী পাসপোর্টে চীনের গুয়াংজু এয়ারপোর্টে ট্রানজিট ভিসা রিজেকশনের অভিজ্ঞতা

Welcome to Guangzhou Airport

আজ স্থানীয় সময় রাত ১০ টায় লাওসের ভিয়েনটিয়েন থেকে চায়না সাউদার্নের ফ্লাইটে গুয়াংজু নেমে ইমিগ্রেশনে গিয়ে পাসপোর্ট, বোর্ডিং পাস, আর এ্যারাইভাল কার্ড দিয়ে বলি ২৪ ঘণ্টার ট্রানজিট ভিসা নিতে চাই। মহিলা অফিসার পিছনে একটা সাইন দেখিয়ে বলে ওখানে গিয়ে পারমিট নিয়ে আস।

২৪/১৪০ ঘণ্টার ট্রানজিট ভিসা সাইনটা ফলো করে টেম্পোরারী এন্ট্রি পারমিট এপ্লিকেশন ডেস্কে আসি। তিনটা বুথের মধ্যে একটা বুথ খোলা। একজন মহিলা অফিসার। সামনে ৪-৫ জন লাইনে। অফিসে ঢোকার আগে টেম্পোরারি এ্যারাইভাল কার্ড দেখেছিলাম একটা ডেস্কে। সবার হাতে সেটা দেখে আবার গিয়ে সেই কার্ডটা পুরন করে নিয়ে আসি। সবাই ভিসা নিয়ে চলে যাওয়ার পর আমার পাসপোর্ট, দুইটা বোর্ডিং পাস, আর টেম্পোরারি এ্যারাইভাল কার্ডটা দিয়ে বলি ২৪ ঘন্টার ট্রানজিট ভিসা নিতে চাই।

মহিলা অফিসার বাংলাদেশী পাসপোর্টটা দেখে জিজ্ঞেস করে, তোমাকে এখানে কে পাঠিয়েছে? বললাম, নিজেই এসেছি। একটা ফর্ম দেখিয়ে বলল, চায়না সাউদার্ন কাউণ্টারে যাও। এই ফর্মটা নিয়ে আস। ওরা যদি ফর্ম দেয়, ভিসা দিব। জিজ্ঞেস করলাম, চায়না সাউদার্নের কাউন্টারটা কোথায়? দেখিয়ে দিল।

চায়না সাউদার্নের কাউন্টারে গিয়ে বোর্ডিং পাস দুটো দিয়ে বললাম, একটা ফর্ম দিতে বলেছে ভিসার জন্য। ওরা প্রথমে একটা স্টিকারের মত দিল। বললাম, না, এটা না। বড় ফর্ম। সে তখন একটা বড় ফর্ম দিল, যেটা আসলে এয়ারলাইনসের পক্ষ থেকে একটা গ্যারান্টি ফর্ম। সেটার সাথে আরেকটা পেপার দিয়ে বলল, ভিসা হলে কিভাবে ট্রান্সফার এবং হোটেল পাবে সেটা এখানে দেয়া আছে।

ফর্ম নিয়ে এন্ট্রি পারমিট এপ্লিকেশন ডেস্কে এসে মহিলা অফিসারের কাছে দিলাম, পাসপোর্ট এবং বোর্ডিং কার্ড সহ। মহিলা ফর্মটা নিয়ে দেখল, এবং প্রচন্ড বিরক্ত মুখে বললঃ

– তুমি কোথা থেকে আসছ?
– লাওস।
– কোথায় যাবে?
– ঢাকা।
– চীনে কেন ট্রানজিট নিয়েছ?
– লাওস থেকে সরাসরি ফ্লাইট নেই, তাই।
– লাওসে কি কর?
– ট্যুরিস্ট। ঘুরতে গিয়েছিলাম।
– ফ্লাইট না থাকলে লাওসে কিভাবে গেছ?
– প্রথমে গিয়েছি মালয়েশিয়া, সেখান থেকে কম্বোডিয়া, সেখান থেকে লাওস।

এবার একটা লিস্ট বের করে দেখল, তারপর সুপাভাইজারকে ফোন দিয়ে কথা বলল বেশ কিছুক্ষণ। তারপর ফোন রেখে বেশ কঠিন মুখে বলল, সুপারভাইজার বলেছে ভিসা দেয়া যাবে না। এয়াপোর্টই থাকতে হবে।

জিজ্ঞেস করলাম, কি কারনে দেয়া যাবে না জানতে পারি?
বলল, না, কারন বলা যাবে না। বলে সব কাগজপত্র ফেরত দিল।
আবার বললাম, এয়ারপোর্টে কোথায় থাকতে পারি?
বলল, চায়না সাউদার্নের কাউন্টারে যাও। ওদের লাউঞ্জ আছে।

Transit area at Guangzhou Airport
গুয়াংজু এয়ারপোর্টের ট্রানজিট এরিয়া

ট্রাভেল গ্রুপে পোষ্ট দিয়েছিলাম চীনে ২৪ ঘণ্টার নীচে ট্রানজিট থাকলে ট্রানজিট ভিসা পাওয়া যায় কি না। অনেকে কমেন্টে বলেছিল, পানির মত সহজে ট্রানজিট ভিসা পাওয়া যায়। বাংলাদেশীদের ট্রানজিট ভিসা দেয় বিশ্বাস করা কঠিন হলেও এত জনে পেয়েছে দেখে ২১ ঘণ্টা ট্রানজিটের টিকেট করি। বোনাস হিসেবে একটা দেশ ঘুরে যেতে পারলে মন্দ কি, এই চিন্তায়।

আজ গুয়াংজু এয়ারপোর্টে টেম্পোরারী এন্ট্রি পারমিট এপ্লিকেশন ডেস্কের অফিসারের মুখভঙ্গি দেখে একটা বাচ্চাও বলতে পারবে, তার জীবনে সে কোন বাংলাদেশী পাসপোর্টধারীকে দেশে ফেরার সময় ট্রানজিট ভিসার পারমিট দেয় নাই। সেটা উন্নত দেশে যাওয়ার সময় দিলে দিতে পারে। ট্রনজিট ভিসা সাধারনত সেই রকমই হয়। মানুষের পানির মত সহজে ট্রানজিট ভিসা পাওয়া যায় কমেণ্ট দেখে এই সাধারন চিন্তাটা মাথার উপর দিয়ে চলে গেছে। আজ শিক্ষা হলো।

Leave a Comment