Hasan's Travels

Stories of traveling the world solo, independently, with one of the weakest passports in the world.

বাংলাদেশী পাসপোর্টে লাওস ইমিগ্রেশন অভিজ্ঞতা

At Vientiane Airport in Laos after crossing the Laos Immigration

আজ সন্ধ্যায় কুখ্যাত লাওস ইমিগ্রেশন অতিক্রম করলাম, কম্বোডিয়ার রাজধানী প্নমপেন থেকে ফ্লাইটে এসে।

ভিয়েতনাম এয়ারলাইনস এর চেক-ইন কাউণ্টার

প্নমপেন ইণ্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে ভিয়েতনাম এয়ারলাইনসের কাউন্টারে পুরুষ কর্মীর কাছে পাসপোর্ট এবং টিকেট দেয়ার পর জিজ্ঞেস করল, সাথে কত ক্যাশ আছে। বললাম, দুই হাজার ডলার। বলল,দেখাও। টাকা বের করে গুণে দেখালাম। এবার তার সিনিয়র মহিলা সুপারভাইজারকে ডেকে তার কাছে পাসপোর্ট আর টিকেট হস্তান্তর করল।

মহিলা কর্মী জিজ্ঞেস করল, রিটার্ন টিকেট, হোটেল বুকিং আছে? বললাম, আছে। সব সকালেই প্রিণ্ট করেছিলাম। সেগুলো তার হাতে দিলাম। হোটেল বুকিংগুলো দেখলো। তারপর পুরুষকর্মীকে বলল ফ্লাইটটা চেক করতে। সেটা চেক করে দেখল ঠিক আছে। তারপর জিজ্ঞেস করল, সাথে কত ক্যাশ আছে। বললাম, দুই হাজার। বলল, দয়া করে দেখাও। পুরুষ কর্মীকে দেখিয়ে বললাম, ওকে এইমাত্রই দেখিয়েছি। বলল, ওকে দেখালে হবে না। ছবি তুলতে হবে।

আবার টাকা বের করে ছড়িয়ে ধরলাম। সে ছবি তুললো। তারপর বলল, দয়া করে পাশের কাউন্টারে অপেক্ষা কর। লাওস থেকে ক্লিয়ারেন্স আসতে হবে। বললাম, পাসপোর্ট আর ডকুমেন্টগুলো দাও। সেগুলো নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, এই নিয়ম কি শুধু বাংলাদেশ পাসপোর্টের জন্যই? বলল, না, আরো কয়েকটা দেশ আছে লিস্টে। জিজ্ঞেস করলাম, কোন কোন দেশ। বলল, আছে অনেকগুলো, এখন মনে করতে পারছি না।

পাশের কাউন্টারে এসে দাঁড়ালাম। এবার আরেকজন পুরুষ কর্মী এসে বলল, তুমি ওয়েটিং এরিয়াতে অপেক্ষা করতে পার। মিনিট দশেক সময় লাগবে। সে মনে হলো মহিলারও সিনিয়র। বললাম, দশ মিনিটই যদি সময় লাগে, এখানেই দাঁড়াই, সমস্যা নেই।

আমি দাঁড়ানোর পরেই আরো একজন বাংলাদেশিকে এনে দাঁড়া করাল। ওনাকে জিজ্ঞেস করল, দুই হাজার ডলার ক্যাশ আছে কিনা। উনি তিন হাজার ডলার বের করে দেখালেন। ওনাকেও অপেক্ষা করতে বলল।

মিনিট দশেক পরে ভিয়েতনাম এয়ারলাইন-এর মহিলা কর্মী ফিরে এসে বলল, তোমার চায়না ভিসা আছে? বললাম, না, নেই। চায়নাতে শুধু ট্রানজিট, ভিসার দরকার নেই। বলল, টিকেটটা আরেকবার দেখতে পারি? আমি শুধু গুয়াঙজু দেখেছি। টিকেট দিলাম। সেটার ছবি তুলল। তারপর পুরুষ কর্মীকে বলল, টিকিটের ঢাকা লেগ চেক করতে। সেটা চেক করার পর বলল অপেক্ষা করতে।

আরো দশ মিনিট পর ফিরে এসে বলল, যদি দরকার হয়, লাওসে এটিম থেকে আরো কিছু টাকা উইথড্র করতে পরব কি না। বললাম, পারব। ক্রেডিট কার্ড আছে দুইটা। ১২ হাজার ডলার এনডোর্স করা আছে।

Vietnam Airlines Counter at the Phenom Penh International Airport in Cambodia
প্নমপেন ইণ্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে ভিয়েতনাম এয়ারলাইনসের কাউণ্টার

এসময় বাংলাদেশি ভদ্রলোক এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করলেন আমি বাংলাদেশি কিনা। তারপর নিজের পরিচয় দিলেন। কম্বোডিয়াতে বাংলাদেশের একটা বড় কোম্পানির ফ্যাক্টরির দায়িত্বে আছেন। সেই সাথে ঐ কোম্পানীর আশেপাশের মোট ৩০ টা দেশের অপারেশন দেথাশোনা করেন। কম্বোডিয়া এবং ভিয়েতনামের পারমানেন্ট রেসিডেন্সি আছে। জিজ্ঞেস করলাম, লাওস কেন যাচ্ছেন, ঘুরতে? বললেন, সেই রকমই।

আরো মিনিট পনেরো পরে মহিলা অফিসার ফিরে এসে বলল, ডকুমেন্টসগুলো দাও। ডাবল চেক করব। দিলাম। তারপর বলল, ব্যাগ বেল্টে রাখ। চেকইন ব্যাগটা বেল্টে দিলাম। বলল, একটাই ব্যাগ? বললাম, চেক ব্যাগ একটাই। সেটাতে ব্যাগেজ স্টিকার লাগালো। তারপর বোর্ডিং পাস হাতে দিয়ে বলল, আমি সব কিছু ডাবল চেক করে দিলাম। লাওস ইমিগ্রেশনে ওরা আবার সব চেক করবে। সব কাগজপত্র সাথে রেখ। তাকে ধন্যবাদ দিয়ে বোডিং পাস নিয়ে ইমিগ্রেমনের দিকে রওনা দিলাম। বাংলাদেশি ভদ্রলোককে বললাম, আসেন শেষ করে।

পুরো সময়টায় ভিয়েতনাম এয়ারলাইস এর কর্মীদের ব্যবহার অত্যন্ত ভাল ছিল। এই সময়ে অসংখ্যবার সরি বলেছে। বলেছে, এগুলো তোমাদের পাসপোর্টের জন্য লাওস ইমিগ্রেশনের রিকোয়ারমেন্টস। আমাদের সেটা পুরন করতেই হয়।

On the way to the immigration at Phnom Penh International Airport in Cambodia
প্নমপেন ইণ্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে ইমিগ্রেশনের পথে

কম্বোডিয়া ইমিগ্রেশন

পাঁচ মিনিটের মধ্যে দোতালায় ইমিগ্রেশনে পুরুষ অফিসারের বুথে আসলাম। হাঁসি দিয়ে তাকে পাসপোর্ট দিলাম। শোলডারে ক্লিপ দিয়ে লাগানো ডিএসএলআরটা কৌতুহল নিয়ে দেখল।

– কোথায় যাচ্ছ?
– লাওস।
– এখানে কি কর?
– ট্যুরিস্ট। ঘুরতে এসেছিলাম। এখন চলে যাচ্ছি।
– লাওসে কতদিন থাকবে?
– ৩০ এপ্রিল ফ্লাইট – ৯ দিন।
– লাওস থেকে কোথায় যাবে?
– বাড়ি। ঢাকা।

ক্যামেরাটা এগিয়ে এনে ছবি তুলল। তারপর বুড়ো আঙ্গুল দুটোর ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে পাসপোর্ট আর বোর্ডিং পাস ফেরত দিল। তাকে ধন্যবাদ দিয়ে সামনে আগালাম। পাসপোর্ট খুলে দেখি আগের এরাইভ্যাল স্টিকারের পাশে আরেকটা ডিপারচার স্টিকার বসিয়েছে। এরা কোন সীল মারে না।

উপরের তালায় প্রায়োরিটি লাউঞ্জে গিয়ে জম্পেশ একটা খাওয়া দিয়ে ঘন্টা দুয়েক পরে গেইটে আসলাম, যখন ডিসপ্লেতে দেখলাম ফ্লাইটের পাশে দেখাচ্ছে, গো টু গেইট। দেখলাম বাংলাদেশী ভদ্রলোকও আছেন। ফোনে কাজের আলাপে ব্যস্ত।

নির্দিষ্ট সময়ের ২০ মিনিট পর ভিয়েতনাম এয়ালাইনস-এর ফ্লাইট VN 920 প্লমপেন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে লাওসের রাজধানী ভিয়েনতিয়েনের দিকে উড়াল দিল।

Exiting Vientiane Wattay International Airport in Laos
লাওসে ভিয়েনটিয়েন ওয়াত্তায় ইণ্টারন্যাশনাল এয়াপোর্ট থেকে বের হওয়ার পথে

লাওস ইমিগ্রেশন

ঘণ্টা দেড়েক পরেই ভিয়েনতিয়েন ওয়াত্যাই ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করল। মজার ব্যাপার, ভিয়েনটিয়েন আর প্নমপেনের সময় একই।

ছোট এয়ারপোর্ট। ১০ মিনিটেই ইমিগ্রেশনে চলে এলাম। জানি সামনে ঝামেলা আছে, তাই আগে বাথরুম থেকে ঘুরে এসে ইমিগ্রেশনে দাঁড়ালাম। একজন অফিসারের চেহারায়ও কোন হাসি নেই। সব ভয়ঙ্কর চেহারা করে রেখেছে। কি পুরুষ, কি মহিলা।

লাইনে একজনের পরেই আমার পালা চলে আসলো। পুরুষ অফিসারের কাছে পাসপোর্ট, বোর্ডিং পাস, এরাইভ্যাল কার্ড, হোটেল বুকিং, রিটার্ন টিকেট, সব একসাথে দিলাম। এ্যারাইভ্যাল কার্ড প্লেনেই দিয়েছিক ছাড়ার পর পরই, ডিপারচার কার্ড সহ। সেটা প্লেনেই পুরন করে নিয়েছিলাম।

অফিসার পাসপোর্ট দেখেই আরেকজন অফিসারকে ডেকে সেগুলো হস্তান্তর করল। সে সেগুলো নিয়ে তার সাথে আসতে বলল। তারপর ইমিগ্রেশন অফিসে এনে চেয়ারে বসতে বলল। বসার পরে বলল, তোমার বন্ধু কই? বললাম, কোন বন্ধু? বলল, তুমি একাই ভ্রমন করছ? বললাম, হ্যাঁ। বলতে না বলতেই বাংলাদেশী ভদ্রলোককে এনে ঢোকালো। বলললাম, ও, এই বন্ধু!

– তোমার ক্যাশ দেখাও।
– বের করে গুণে দেখালাম। তারপর কাগজগুলো সব নিয়ে বাইরে চলে গেল। কিছুক্ষণ পর ফেরত আসল। হাতে ফোন। সম্ভবত হোটেলগুলোতে সব চেক করে দেখেছে বুকিং ঠিক আছে কি না।
– কম্বোডিয়া ইমিগ্রেশন সম্ভবত তোমাকে বলেছে, আমরা তোমার কাছ থেকে ১,০০০ ডলার ডিপোজিট রাখব। যাওয়ার সময় ফেরত পাবে।
– না, এমন কিছু বলেনি।
– এটা তোমার দেশের জন্য আমাদের রুলস, নিশ্চিত হওয়ার জন্য যে তুমি ফেরত যাবে, যেহেতু তোমাদের কোন এ্যাম্বাসী এদেশে নেই। অনেক বাংলাদেশি এখানে এসে ফেরত যায় নি, তাই আমরা এই নিয়ম করেছি। যদি তুমি ডলার ডিপোজিট রাখতে না চাও, তোমাকে ডিপোর্ট করে দিব।
– ডিপোজিট রাখলে রিসিট দিবে?
– অবশ্যই দিব। তার সামনে ডিপোজিটর ফর্ম রাখা দেখলাম। এটা আসলেই স্ট্যান্ডার্ড প্রসিডিওর।
– আমি যদি ফেরত যেতে না চাই, তুমি ১,০০০ ডলার ডিপোজিট রাখলেও আমি ফেরত যাব না। তুমি একজন বুদ্ধিমান অফিসার, এটা ভেবে দেখ। আমি একজন ট্যুরিস্ট। অনেক দেশে গিয়েছি। কোথাও এমন কথা শুনিনি। আমার কাছে তোমার দেশের জন্য মূল্যবান বৈদেশিক মূদ্রা আছে, যা আমি তোমার দেশে খরচ করতে চাই। তুমি যদি আমাকে ঢুকতে না দাও, তোমার দেশের লস।
– তাহলে তুমি ডলার ডিপোজিট রাখতে চাও না?
– এটা যদি তোমার দেশের আইন হয়, তাহলে আমাকে তা পালন করতে হবে। কিন্তু আমি সেটা করতে চাই না। আমাকে যদি ডিপোর্ট কর, এটা আমার জন্য একটা হেনস্তা। কারন আবার ফ্লাইট বুক করতে হবে। তুমি একজন ট্যুরিস্টকে হেনস্তা করছ, যা তোমার দেশের সুনামের জন্য ভাল নয়।

এবার আমার পাশের চেয়ারে বসা বাংলাদেশি ভদ্রলোকের কাছে গিয়ে বলল, তোমার ক্যাশ দেখাও। উনি ৩,০০০ ডলার দেখালেন। সেই সাথে কম্বোডিয়া এবং ভিয়েতনামের পারমানেন্ট রেসিডেন্সি কার্ড। জিজ্ঞেস করল, তোমার ভিয়েতনামের ব্যাংক এ্যাকাউন্ট আছে? উনি ভিয়েতনামের ব্যাংকের কার্ড দেখালেন। বলল, এই এ্যাকাউন্টের ব্যালেন্স মোবাইলে দেখাও। উনি সেটা দেখাতে পারলেন না। তার বদলে বললেন, আমি লাওস থেকে সিঙ্গাপুর যাব, সেখান থেকে ব্রুনেই, তারপর বাংলাদেশ। এরপর ভিসা এবং টিকেট দেখালেন। এবার তারা সন্তুষ্ট হল এবং ওনাকে ইমিগ্রেশনে যেতে বলল।

আবার আমার কাছে ফেরত আসল।

– তুমি কি কর?
– ব্যবসা।
– সার্টিফিকেট আছে?
– হ্যাঁ, আছে।

ট্রেড লাইসেন্সের নোটারী কপি দিলাম। সাথে বিজনেস কার্ড। সেগুলো পাসপোর্টের সাথে মিলিয়ে দেখল। এবার পুরনো পাসপোর্টে ইউকে আর শেনজেন ভিসা বের করে দেখালাম।

– দেখ, আমি উইরোপ, ইউকে গিয়ে ফিরে এসেছি। এই ট্রিপেও মালয়েশিয়া থেকে ফিরে এসেছি। থেকে গেলে মালয়েশিয়া থেকে যেতে পারতাম, যেটা তোমার দেশের চেয়ে অনেক ভাল ইকোনমি। আমি শুধু ঘুরতে এসেছি। ঘুরে ৩০ তারিখে চলে যাব।

গুয়াংজু হয়ে রিটার্ন টিকেটটা দেখল আর ভাবতে থাকল। আরেকজন বয়স্ক অফিসার এসে টিকেটটা দেখল। বলল, গুয়াঙজু যাবে? বললাম, গুয়াংজু শুধু ট্রানজিট। সেখান থেকে ঢাকা। বলে তাকে ঢাকা লেগটা দেখালাম। সে মাথা নেড়ে চলে গেল।

এবার আগের অফিসারকে ব্যাংক স্ট্যাটমেন্টটা দিলাম। বললাম, দেখ, বাংলাদেশে আমার টাকা আছে, ব্যবসা আছে। লাওসে থেকে আমি কি করব? লেবার হিসেবে কাজ করব? দেশে মানুষ আমার জন্য কাজ করে।

এবার ট্রেড লাইসেন্স আর বিজনেস কার্ডটা কপি করল। পাসপোর্ট সহ বাকী ডকুমেন্ট আগেই কপি করেছিল। তারপর বলল, ঠিক আছে, তুমি যেতে পার। বললাম, ধন্যবাদ। তুমি কিছু লিখে দাও, যাতে ইমিগ্রেশন ছেড়ে দেয়। বলল, লাগবে না। বলে দরজা খুলে ডিপ্লোমেটিক লাইনটা দেখিয়ে দিল।

রুম থেকে বের হতে যাচ্ছি, দেখি আরেক অফিসার আরো তিনটা বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে ভিতরে ঢুকল। অফিসের বাইরে তিনজন অল্পবয়সি বাংলাদেশি ছেলেকে আরেকজন অফিসার চেয়ার দেখিয়ে এখানে বসে থাকতে বলছে।

ডিপ্লোমেটিক বুথে আমার আগে হুইলচেয়ারে একজন মহিলা ছিল। তার কাজ শেষ করে অফিসার উঠে বাইরে চলে আসল। তাকে বললাম, এখানে দাঁড়াতে বলেছে তোমাদের অফিস থেকে। বলল, পাশেরটায় দাঁড়াও। দেখনা, এটা ডিপ্লোমেটিক বুথ।

পাশেরটা অফিশিয়াল পাসপোর্ট হোল্ডারদের বুথ। সেটাতে গিয়ে মহিলা অফিসারের কাছে পাসপোর্ট, বোর্ডিং পাস, আর এ্যারাইভ্যাল কার্ড দিলাম। সে পাসপোর্টের সব পাতা উল্টিয়ে দেখতে থাকলো। তারপর কিছু বলার জন্য মুখ খুলতেই বললাম, তোমাদের অফিস থেকে পাঠিয়েছে। বলে তাদের অফিসটা দেখালাম।

আমার ইন্টারোগেশন করা অফিসারটা আবার দরজা খুলে ভিতরে ঢুকছিল। তাকে ডাক দিয়ে কিছু জিজ্ঞেস করল। তারপর স্ট্যাম্প দিয়ে পাসপোর্টটা ফেরত দিল, একটা হাঁসি সহ। এই ইমিগ্রেশনে এটাই প্রথম কোন অফিসারের মুখে হাঁসি দেখলাম।

বের হতে হতে বাংলাদেশী তিনজনকে ডাক দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, কোন জায়গা থেকে আসছে। বলল, বাংলাদেশ। ভাবলাম, এদের কপালে দুঃখ আছে। ইমিগ্রেশন থেকে বের হয়ে নীচে এসে ছবি তুলতে তুলতে দেখি এরা বের হয়ে চলে এসেছে! বিস্ময়ের সাথে জিজ্ঞেস করলাম, কি ভিসা নিয়ে এসেছে। বলল, কাজের ভিসা। বুঝলাম, সেই কারনেই জাস্ট কোম্পানীতে ফোন দিয়ে ভ্যারিফাই করে এদের ছেড়ে দিয়েছে।

সন্ধ্যা ৭:৩০ এ ইমিগ্রেশনে ঢুকেছিলাম। ৮:১০ বাজল শেষ করে বের হতে।

গত বছর কীরগিস্থান থেকে কাজাখস্তান যেতে এয়ার আস্তানা কাউন্টারে ২.৫ ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রেখেছিল কাজাখস্তান থেকে ক্লিয়ারেন্স আসার জন্য। সেই ক্লিয়ারেন্স শেষ পর্যন্ত আসে নাই দেখে এমনেই শেষে যেতে দিয়েছিল। আমি তখন গিয়ে লাউঞ্জে বসেছিলাম। প্লেন থেকে আমার নাম ধরে এনাউন্স করছিল। আর লাউঞ্জের স্টাফ ছুটে এসে বলছিল, প্লিজ যাও। তোমাকে ডাকছে।

হেলতে দুলতে গিয়ে প্লেনে উঠেছিলাম। এয়ারআস্তানা ইনচার্জ মহিলা আই কন্টাক্ট না করে আরেক দিকে তাকিয়ে ছিল। কাজাখস্তান এয়ারপোর্টে ইমিগ্রেশন অফিসার পাসপোর্ট নিয়ে উঠে ভেতরে চলে গিয়েছিল। এক মিনিট পর ফিরে এসে স্ট্যাম্প দিয়ে পাসপোর্ট ফেরত দিয়েছিল কোন কিছু জিজ্ঞেস না করে। সেখান থেকে আবুধাবি যাওয়ার সময় ইমাগ্রেশন অফিসে নিয়ে হালকা জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। এবারে লাওস ইমিগ্রেশনই সবচেয়ে কঠিন ছিল পার হওয়া।

আপনাদের লাওস ইমিগ্রেশন অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

Leave a Comment